মাগুরায় পুলিশের কনস্টেবল পদে ৬ লাখ টাকার বিনিময়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে প্রতারণামূলকভাবে অর্থ আত্মসাৎ করার অপরাধে প্রতারক চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ।( ০৫ নভেম্বর) মঙ্গলবার আনুমানিক দুপুর ২টায় প্রতারক চক্রের ০৬ সদস্যকে গ্রেফতার করে মাগুরা সদর থানা পুলিশ । গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন ফরিদপুর কোতয়ালী থানার দশহাজার গ্রামের আইনুদ্দিন ছুরাব শিকদারের ছেলে মেহেদী হাসান শিকদার (২৭), মাগুরা সদর উপজেলার বরই গ্রামের আবু বক্কর মল্লিকের ছেলে মোঃ বাবলু মল্লিক (৩৮) ,শেরপুর নকলা থানার চরমধুয়া গ্রামের মৃত মখছেদ আলী ছেলে মোঃ কবির হোসেন (৩৯), গোপালগঞ্জ কাশিয়ানী থানার খায়ের-হাট গ্রামের মৃত আঃ মান্নান মিয়া ছেলে মিরাজুল ইসলাম (৫৬), মাগুরা সদর উপজেলার নিজনান্দুয়ালী গ্রামের মোঃ কুদ্দুস শেখের ছেলে মোঃ রাসেল শেখ (২৮), মাগুরা মহম্মদপুর থানার বিনোদপুর গ্রামের আঃ মজিদ বিশ্বাসের ছেলে মোঃ হাবিবুর রহমান (৪৫) । আটকের সময় তাদের কাছ থেকে আত্মসাৎকৃত ৬৭ হাজার টাকা, একটি কালো রংয়ের টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার প্রাডো গাড়ী, গ্রেপ্তারকৃত অবসরপ্রাপ্ত কর্পোরাল মোঃ মিরাজুল ইসলাম (৫৬) এর নিজ নামে লাইসেন্সকৃত একটি শর্টগান ও ৪ রাউন্ড কার্তুজ এবং ৭টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
মামলার পলি বেগম জানান,০২নং আসামী মোঃ বাবলু মল্লিক তার প্রতিবেশী হওয়ায় অনুমান ১০/১২ দিন পূর্বে বাদীর নিকট তার ছেলে রবিন (১৯) কে পুলিশে চাকুরি দেওয়ার কথা বলে। কিন্তু তিনি মোঃ বাবলু মল্লিক এর কথা বিশ্বাস না করলে ০২নং আসামী বলে ০১নং আসামী মেহেদী হাসান শিকদার তার আপন ভগ্নিপতি এবং সে বর্তমান সরকারের অতি গুরুত্বপূর্ণ একজন ব্যক্তির এপিএস হিসাবে দায়িত্ব পালন করছে। পরবর্তীতে ০১নং আসামী মেহেদী হাসান শিকদার বাদীর নিকট মোবাইল ফোনে নিজেকে বর্তমান সরকারের অতি গুরুত্বপূর্ণ একজন ব্যক্তির এপিএস বলে পরিচয় দেয় এবং তিনি বাদীর ছেলেকে ০৬ লক্ষ টাকার বিনিময়ে পুলিশে চাকরি দিয়ে দিবেন বলে তাকে আশ্বস্ত করে। গত ৩০/১০/২০২৪ খ্রিঃ পলি বেগম ০২ নং আসামী মোঃ বাবলু মল্লিক এর নিকট ৩ লক্ষ টাকা প্রদান করেন এবং চাকুরির দেওয়ার পর বাকী ৩ লক্ষ টাকা আসামীদের দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। পরবর্তীতে গত (০৩ নভেম্বর) রাতে ০ ২নং আসামী মোঃ বাবলু মল্লিক এর বাড়ীতে এজাহারনামীয় অন্যান্য সকল আসামীরা এসে বাদীর সাথে দেখা করে। এসময় ০১নং আসামী নিজেকে বর্তমান সরকারের অতি গুরুত্বপূর্ণ একজন ব্যক্তির এপিএস পরিচয় দেয় এবং ০৩নং আসামী মোঃ কবির হোসেন কে তার ড্রাইভার, ০৪নং আসামী মোঃ মিরাজুল ইসলাম কে সেনা বাহিনীর অফিসার হিসাবে পরিচয় করিয়ে দেয়। গত (০৪ নভেম্বর ) সকালে বাদীর ছেলে রবিন (১৯), মাগুরা পুলিশ লাইনে কন্সটেবল নিয়োগ পরীক্ষা দিতে গেলে আসামীরা একটি কালো রংয়ের টয়োটা ল্যান্ড ক্রইজার প্রাডো গাড়ীতে এসে বাদীর সাথে পুলিশ লাইন এর সামনে রাস্তার উপর দেখা করেন। পরবর্তীতে আসামীদের কথাবার্তা ও আচরণ পলি বেগমের কাছে সন্দেহজনক মনে হলে তিনি জানতে পারেন আসামীরা জনৈক হুজাইফা, পিতা-শরিফুল, সাং-চাপাতলা, থানা-মহম্মদপুর, জেলা-মাগুরার নিকট থেকেও পুলিশের চাকুরি দেওয়ার কথা বলে নগদ ৪০,০০০/- (চল্লিশ হাজার) টাকা নিয়েছে। মোছাঃ পলি বেগম (০৫ নভেম্বর) থানায় এসে আসামীদের বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করলে মাগুরা জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার মিনা মাহমুদা, বিপিএম মহোদয় দ্রুতসময়ের মধ্যে প্রতারকদের গ্রেফতারের নির্দেশ দিলে মাগুরা সদর থানা পুলিশ আসামীদেরকে মাগুরা পুলিশ লাইনসের সামনে থেকে ( ০৫ নভেম্বর) গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায় আসামীরা একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র এবং তারা দীর্ঘদিন ধরে চাকরি দেওয়ার কথা বলে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকা হতে মানুষের কাছ থেকে প্রতারণামূলকভাবে মোটা অংকের অর্থ আত্মসাৎ করে আসছে জানা যায়।
Leave a Reply